ইসলাম সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে হাসি তামাশা অত্যন্ত নিন্দনীয় - skilled muslim
মুসলিম ভাইয়েরা, আল্লাহপাকের কাছে যে বিষয়গুলো অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং তিনি যেগুলোর কারণে বান্দার সব আমল বাতিল করে দেন, এসবের অন্যতম হচ্ছে—দ্বীন ইসলাম বা ইসলাম সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে হাসি-তামাশা করা। শুধু কি আমল বাতিল হয়ে যাওয়া, বরং কোনো কোনো কথা ও ঠাট্টা তো আপনাকে ইসলাম থেকে বের করে দেবে আপনার অজান্তে।
.
নামাজ না পড়া গোনাহের কাজ, কিন্তু নামাজ বা নামাজিদের নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কিংবা তামাশা করা কুফুরি। মুনাফেকদের প্রথম পরিচয় ছিল, তারা মুসলমানদের নিয়ে হাসি-তামাশা করত, তাদের বোকা ভাবত। আল্লাহপাক তাদের ধমক দিয়ে বলেছেন, ‘তারাই বোকা অথচ নিজেরা তা জানে না।’ (সূরা বাকারা-১৩)
.
ইমাম ইবনে কুদামাহ লিখেছেন, যে আল্লাহকে স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় গালি দিল, কিংবা যে আল্লাহ বা তাঁর রাসুল কিংবা দ্বীনের কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করল, সে কাফের হয়ে গেল। (আল মুগনি)
.
ইমাম নববী বলেন, স্বেচ্ছায় কিংবা কেউ যদি স্পষ্টভাবে এমন কোনো কথা বলে যা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের কোনো বিধানকে তুচ্ছ করে, তা অবশ্যই কুফুরি। ইমাম কুরতুবি লিখেছেন, মজা করার জন্য হোক বা সত্যি সত্যি হোক, ইসলামের কোনো সাধারণ বিষয় নিয়ে হাসি-তামাশা করা কুফুরি। এতে কারও দ্বিমত নেই।
.
ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, দ্বীনের যে কোনো স্পষ্ট বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করা কুফুরি। যে এমন করল তার ঈমান ধ্বংস হয়ে কুফুরিতে পরিণত হলো।
তাই কোনো একজন সাধারণ মানুষ, যে দাড়ি রেখে দ্বীনের ওপর চলতে সচেষ্ট, অথবা টাকনুর উপর কাপড় পরিধান করেন, যে নারী বোরকায় নিজেকে আবৃত রেখে চলতে চান, তাকে যদি এ কারণে কেউ তুচ্ছ ভাবে কিংবা অন্য দৃষ্টিতে দেখে, তবে নিশ্চয়ই বিষয়টি গিয়ে দ্বীনের সীমারেখা পর্যন্ত পৌঁছে, যা অত্যন্ত ভয়ানক বিষয়। অনেক নামাজি মানুষ কিংবা দাড়িওয়ালা সাধু হয়তো অপকর্মে লিপ্ত, তাই বলে তো আর ইসলাম ধর্মকে গালমন্দ করা বৈধ হয়ে যায় না, এটি তার স্বভাবের দোষ, নামাজ কিংবা আমলের এতে কী? যত্তসব ভন্ড এই জুব্বা টুপি আলা! হটাত আবার মৌলবী সাজলি কেন!
.
অহরহ পথে-ঘাটে এসব বিষয় নিয়ে ‘মশকরা’ করে মানুষ নিজের অজান্তেই তার দ্বীন থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যায়, সামান্য ‘বিদ্রূপে’ শেষ হয়ে যায় তার এতদিনের সব নেক আমল। তাই আজ থেকে সব বিষয় নিয়ে হাসি-তামাশা নয়, ইসলাম এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য নয়, সামান্য একটু হাসির জন্য নিজের সব ঈমান-আমল বিকিয়ে দেয়া কোনো সচেতন বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারেনা। তাই আসুন, এই নিন্দনীয় কাজ-কর্ম থেকে নিজেরাও বেঁচে থাকি, অন্যকেও বাঁচিয়ে রাখি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমিন।।
No comments